ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি ও মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক নতুন এই কমিটির তালিকা প্রকাশ করেন।
ড. কামালের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে কামাল হোসেন সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির তালিকা করেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে রয়েছেন ১০১ জন।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই গণফোরামে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব শুরু হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি আর অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৭ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে গণফোরামের আরেকাংশ। তবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাদের ঐ কাউন্সিলে দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন না।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল বলেন, দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ। অধিকাংশ দলের আপত্তি সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা এক ভয়ংকর অশনিসংকেত।
তিনি বলেন, দেশ গভীর রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। গণতন্ত্র নির্বাসিত, স্বৈরাচারী সরকারের গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে দেশে চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। অর্থনীতির আজ চরম দুরবস্থা। শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রে যারা দায়িত্বে আছেন, তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন। দেশের টাকা দুর্নীতি হয়ে পাচার হচ্ছে। সরকার একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সবাই মিলে এ রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হবে। দেশকে বাঁচানোর সবচেয়ে বড় সুযোগ হচ্ছে একটি সত্যিকারের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।
ড. কামাল আরও বলেন, পত্র-পত্রিকা খুললেই দেশের অবস্থা কেমন সবাই বুঝতে পারে। দেশকে তো আমরা এভাবে রাখতে পারি না। দেশে-বিদেশে মানুষ কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করে, কিন্তু সেই অর্থের দেখভালের দায়িত্বে যারা থাকেন, নরম সুরে বললে তারা তা অবহেলা করেন।
গণফোরামের ঘোষিত কমিটির অন্যান্য পদের মধ্যে সভাপতি পরিষদের সদস্য হয়েছেন খালেকুজ্জামান, মফিজুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেনসহ ১৭ জন। কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন নুরুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইয়াসিন, দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম।
কাউন্সিল উত্তর এই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির লিখিত বিবৃতি তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, নিত্যপণ্যের মূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, তেল-গ্যাসের মূল্য নিয়ে সরকারের অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতা এবং লুটেরাদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে জনগণের অর্থনৈতিক দুরবস্থা আজ চরমে। লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সভাপতি পরিষদের সদস্য মফিজুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সভাপতি পরিষদের সদস্য মোস্তাক আহমেদ।
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com