বরিশাল প্রতিনিধি: নিজেদেরকে অশিক্ষিত মূর্খ্য, অসচেতন দাবি করে মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে লিজের শর্ত ভঙ্গ করে আমেরিকা প্রবাসী পুত্র রনজু সরদার ও তার পিতা ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সভাপতি রব সরদারের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখলকৃত ওই সম্পত্তিতে ইতোমধ্যে নির্মান করা হয়েছে বহুতল পাকা ভবন, পুকুর কেটে মাটি বিক্রি ও সরকারি খাল ভরাটের অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়নের দক্ষিন গোবর্দ্ধন গ্রামের।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভূমি অফিস বরাবরে এলাকাবাসির দায়ের করা লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, দক্ষিন গোবর্দ্ধন গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা ওয়ার্কার্স পাটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রব সরদার ও তার পুত্র উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আমেরিকা প্রবাসী রনজু সরদার গোবর্দ্ধন গ্রামের বিভিন্ন দাগ ও খতিয়ানের ৩ একর ৬১ শতক জমি সম্প্রতি সময়ে লিজ নেন। সম্পত্তি লিজ নিতে গিয়ে পিতা-পুত্রের দেওয়া লিখিত হলফনামায় দেখা গেছে, তারা নিজেদের অশিক্ষিত মূর্খ্য, কৃষিজীবী, জমাজমি সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও অসচেতন এবং লিজের শর্ত সম্পর্কে জ্ঞান নেই বলে দাবি করেন। তাদের কাগজপত্র যাচাই বাছাই ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আব্দুর রব সরদার ওয়ার্কার্স পার্টির উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি প্রতিবছর তিনি দু’একবার আমেরিকায় যাতায়াত করে থাকেন। তার পুত্র যুবলীগ নেতা রনজু সরদার আমেরিকার প্রবাসী। তারা এলাকার ধনাঢ্য ব্যাক্তি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লিজ নেওয়া সরকারি সম্পত্তিতে লিজের শর্ত ভঙ্গ করে তারা পাকা দোতালা ভবন নির্মান কাজ শেষ করেছেন। লিজের প্রায় এক একর জমির মাটি বিক্রি করে সেখানে একটি পুকুর খনন করেছেন। এছাড়া ১ একর ৬৫ শতক সরকারি খাল ভরাট করেছেন। স্থানীয়রা জানান, প্রায় শত বছর ধরে এলাকাবাসী ওই খালের পানি দিয়ে বোরো জমিতে সেচ সুবিধাসহ পয়নিস্কাশনের সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন। প্রভাব খাটিয়ে সেই খালটি ভরাট করায় গ্রামবাসীর চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী আব্দুর রব সরদার ও তার পুত্র রনজু সরদার ২০০৭ সালে ওই সম্পত্তি লিজ নিয়ে মালিকানা সম্পত্তি হিসেবে দাবি করে ভোগ দখল করেন। ইতোমধ্যে তারা সরকারি সম্পত্তির প্রায় ২০ লাখ টাকার মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি করে পুরো টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়াও লিজের শর্ত ভঙ্গ করে গত বছর সরকারি সম্পত্তিতে অনুমোদবিহীন নকশায় ৫তলা বহুতল ভবন নির্মানের পরিকল্পনায় দোতালা ভবন নির্মান কাজ সম্পন্ন করেছেন।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওই সম্পত্তির আর.এস রেকর্ডিয় মালিক ছিলেন সুভাশিনি দেবী। ১৯৬৫ সালে সুভাশিনি ভারতে চলে যান। উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মিজানুর রহমান জানান, ১৯৭০ সালে এক আদেশে ওই সম্পত্তি ভিপিভূক্ত করা হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইলিয়াছুর রহমান বলেন, কোন ব্যক্তি লিজকৃত ভূমির প্রকৃতি পরিবর্তন কিংবা পাকা ভবন নির্মান করতে পারবেন না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুব আলম জানান, এলাকাবাসির দায়ের করা অভিযোগের পর নির্মান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযোগ সম্পর্কে আব্দুর রব সরদারের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্ঠা করা হলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এইবেলা ডটকম/কল্যান/এমকে/এসজি
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com