তথাকথিত ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রতিরোধের অজুহাতে ফ্রান্সের অন্তত ৭৬টি মসজিদ বন্ধের হুমকি দিয়েছে দেশটির সরকার। এসব মসজিদে নিয়মিত তল্লাশি চালানো হবে, এসময় সন্দেহজনক যেকোনও কিছু দেখলেই সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার আরটিএল রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিওক্লিপ টুইট করেছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন। এর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘৭৬টি মসজিদে বিচ্ছিন্নতাবাদ নিয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে। আগামীতে এসব মসজিদ পরীক্ষা করা হবে। কখনও যদি এই সন্দেহ নিশ্চিত হয়, তাহলে সেগুলো বন্ধ করতে বলব।’
তিনি আরও জানান, মৌলবাদের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বৈধ কাগজপত্রহীন ৬৬ জন অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ডারমানিন বলেন, ‘ফ্রান্সের ২ হাজার ৬০০টির বেশি মুসলিম প্রার্থনাকেন্দ্রের মধ্যে ৭৬টি মসজিদকে দেশের প্রজাতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করা হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘কিছু কেন্দ্রীভূত প্রার্থনাকেন্দ্র রয়েছে, যা স্পষ্টতই প্রজাতান্ত্রবিরোধী। সেখানকার ইমামগণ গোয়েন্দাদের অনুসরণ করেন এবং তাদের বক্তব্য আমাদের মূল্যবোধের পরিপন্থী।’
বন্ধের হুমকিতে থাকা মসজিদগুলো কোন এলাকার তা নিশ্চিত করেননি ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রধানদের কাছে পাঠানো তার একটি চিঠি হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তালিকাভুক্ত মসজিদগুলোর ১৬টি প্যারিস অঞ্চলের, বাকিগুলো দেশটির বিভিন্ন অংশে অবস্থিত।
গত অক্টোবর থেকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ তার ভাষায় ‘ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ’-এর বিরুদ্ধে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেন। সেসময় তিনি ইসলামকে বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন ধর্ম বলে মন্তব্য করেন। তাছাড়া, মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগলেও মহানবী (স)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ হবে না বলে ঘোষণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
এসময় ক্লাসরুমে মহানবী (স)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের জেরে স্যামুয়েল প্যাটি নামে এক শিক্ষককে হতা করে এক যুবক। এরপর দু’টি সরকারি ভবনে মহানবী (স)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে ম্যাক্রোঁ সরকার, শুরু হয় কথিত ‘ইসলামি উগ্রবাদবিরোধী’ অভিযান।
গত ২০ অক্টোবর প্যারিসের উপকণ্ঠে একটি মসজিদ বন্ধ করে দেয় দেশটি। ওই মসজিদ থেকে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এছাড়া, মুসলিম চ্যারিটি বারাকাসিটি এবং কালেক্টিভ ইসলামোফোবিয়া ইন ফ্রান্স (সিসিআইএফ) নামে দু’টি ইসলামি সংস্থাও বন্ধ করে দিয়েছে ফ্রান্স। দু’টি সংস্থাই ফরাসি সরকারের তোলা উগ্রবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সূ্এ: আল জাজিরা
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com