পাকিস্তানের লাহোরের কাছে জাতীয় সড়কে প্রকাশ্য দিবালোকেই সন্তানের সামনে গণধর্ষণের শিকার হলেন মা। আর ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার করলেও ঘটনার জন্য নির্যাতিতা নারীকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন পাক পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। পুলিশের এমন ন্যক্কারজনক ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিভিন্ন মহিলা সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থা। নিরাপত্তা দিতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে নির্যাতিতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে একাধিক সংগঠন।
রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানে মহিলাদের স্বাধীনতা যেমন নেই, তেমনই নিরাপত্তাও যে নেই, বার বার তার প্রমাণ মিলেছে। দেশে নারী নির্যাতন সহ ধর্ষণের ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। যে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে গত তিনদিন ধরে উত্তাল দেশ, সেই ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার। ওইদিন ভোরের দিকে লাহোর থেকে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে গুজরানওয়ালা যাচ্ছিলেন নির্যাতিতা নারী। কিন্তু পথের মাঝেই গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। স্বামীকে পুরো বিষয়টি জানিয়ে রাস্তায় অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি।
কিন্তু ঘটনাস্থলে মহিলার স্বামী পৌঁছনোর আগেই হাজির হয় একদল মত্ত যুবক। গাড়ি থেকে জোর করে নামানো হয় নির্যাতিতা মহিলাকে। তার পর সন্তানদের সামনেই জোর করে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পরে নির্যাতিতার গয়না, সঙ্গে থাকা এটিএম কার্ড ও নগদ টাকাও ছিনতাই করে চম্পট দেয় ধর্ষকরা। লাহোর-গুজরানওয়ালা জাতীয় সড়কের মতো ব্যস্ত জায়গায় এমন ঘটনার কথা জানাজানি হতেই দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। চাপের মুখে পড়ে পঞ্জাব পুলিশের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে, ওই রাস্তায় এতদিন কোনও পুলিশি টহল ছিল না। পুলিশের বিরুদ্ধে যখন ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ, তখনই বেফাঁস মন্তব্য করে বসেছেন পাক পুলিশের পদস্থ আধিকারিক উমর শেখ। তাঁর কথায়, ‘অত ভোরে ওই মহিলার একা বের হওয়া উচিত হয়নি। পাক সমাজে কেউই তাদের বোন বা মেয়েদের রাতে একা বাইরে বেরনোর আনুমতি দেবে না। নির্যাতিতার উচিত ছিল অন্য কোনও নিরাপদ রাস্তা বেছে নেওয়া।‘
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com