প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ এর পরে যারা রাতের অন্ধকারে অস্ত্রহাতে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তারাই বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র নষ্ট করে দিয়ে গেছে। কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতা কুক্ষিগত করবার জন্য এরা মানুষকে দুর্নীতি শিখিয়েছে, কালো টাকা চিনতে শিখিয়েছে, ঋণ খেলাপী হতে শিখিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) দুপুরে সংসদ অধিবেশনে একাদশ সংসদের ৮ম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কে কোন দলের সেটা বড় কথা নয়। কে এ ধরনের দুর্নীতির সাথে জড়িত অনিয়মের সাথে জড়িত, আমরা যাকেই পাচ্ছি, যেখানেই পাচ্ছি আমরা ধরছি। আবার ধরছি বলেই.. চোর ধরছি বলে চোর হয়ে যাচ্ছি। আমরাই ধরি আবার আমাদেরকেই দোষারোপ করা হয়। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য। এর আগে তো দুর্নীতিটাই নীতি ছিল। অনিয়মটাই নিয়ম ছিল, সেভাবেই রাষ্ট্র চলেছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন এই দেশে মিলিটারি ডিকটেটরশীপ এদেশের মানুষের চরিত্র হনন করেছে। কারণ তাদের অবৈধ ক্ষমতাটাকে নিষ্কন্টক করা- এটাই ছিল তাদের লক্ষ্য। সেখানে এইভাবে বছরের পর বছর এই বীজগুলি, দুর্নীতির বীজ। এই বীজটা বপন করেছে। এটা এখন মহিরুহ হয়ে গেছে, আপনি যতই কাটেন আবার কোথা থেকে গজিয়ে ওঠে। কারণ মানুষের চরিত্রটাই নষ্ট করে দিয়ে গেছে। সেই ক্ষেত্রে এই চরিত্রহীণ্যতা একেবারে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছিল। সেখানে থেকে যতই চেষ্টা করেন এটা মূল উৎপাটন করা যথেষ্ট কঠিন।
সংসদ নেতা বলেন, আমরা সেগুলো মোকাবেলার করার চেষ্টা করছি; যতটুক পারি সেগুলো শুদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আগেই বলেছি আমরা এই অনিয়মগুলো নিশ্চই মানব না। যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেব এটা অব্যাহত থাকবে।
করোনা মোকাবেলা ডাক্তার নার্সদের সুযোগ সুবিধা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ডাক্তার নার্স নিয়োগ করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে যথেষ্ট বেড এবং সব রকম সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাক্তার নার্স যারা কাজ করছে এবং টেকনিশিয়ানদের তাদেরকে তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে রাখার জন্য হোটেল ভাড়া করে থাকা খাওয়া সব দিয়ে রাখা হচ্ছে। সেখানে খরচ তো হবেই।
করোনায় মানুষের কথা সরকার বেশি ভেবেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন একটা ভাইরাস যা চোখেও দেখা যায় না, একটা অদৃশ্য শক্তি। অথচ এর জন্য সারা বিশ্ব আজ আতঙ্কগ্রস্ত। এই অবস্থার মধ্যে চলতে গিয়ে আমাদের দেশের মানুষ করোনাভাইরাসে যেন নিঃস্ব হয়ে না যায়, কষ্ট না পায়।
কারও নাম উল্লেখ না করে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থার ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে যে খবর হলো— যে খবর আপনারা পাচ্ছেন, কে করেছে? কে ধরেছে তাদের? আমরা যাকেই পাচ্ছি তাকেই ধরছি। আমরাই ধরি আবার আমাদের দোষারোপ করা হয়।’
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com