১৫ জুনের সংঘর্ষের পর শান্তি আলোচনা চললেও লাদাখ সীমান্তে দু’পক্ষই সেনা বাড়িয়ে চলেছে। ফলে ক্রমেই চড়ছে উত্তেজনার পারদ। এর মধ্যে ভারত ফের একবার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিল, সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা প্রশমন ঘটাতে হলে গালোয়ানকে নিজের জমি বলে দাবি না করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন কাঠামো নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে চীনকে।
চীনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি শুক্রবার স্পষ্ট করে দেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সামরিক সংঘাত রোখার একমাত্র রাস্তা একটাই, চীনকে অবিলম্বে সেখানে নতুন কাঠামো তৈরি বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, গালওয়ানকে নিজেদের জায়গা বলে যে দাবি করে আসছে চীন, তা একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। এধরনের ভুল দাবি করা হলে, সমস্যা রয়েই যাবে। চীন যদি স্থিতাবস্থা পাল্টানোর চেষ্টা করে, তাহলে বৃহত্তর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর মধ্যেই সেনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ১৫ জুন যেখান সংঘর্ষ হয়েছিল সেই পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ কাছে ফের ঘাঁটি গেড়েছে চীনা সেনা। যার ফলে পেট্রোলিং পয়েন্ট ১০,১১,১১এ এবং ১৩ পৌঁছতে পারছেন না ভারতীয় জওয়ানরা। চীনের অনমনীয় আগ্রাসন নীতির কারণে ঘটনার গতিপ্রকৃতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে দুই দেশের সীমান্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে অদূর ভবিষশ্যতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও বেধে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
গালওয়ানে যে চীনা আগ্রাসন চলছে তা বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলিও বুঝতে পারছে। যদিও এখনও প্রকাশ্যে কেউই এই বিষয়ে তেমন কিছুই বলেনি। ভারত ও চীন দুই তরফের মিত্র রাষ্ট্র রাশিয়া নিজেদের স্বার্থেই মুখ বন্ধ রেখেছে। কারণ তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধানে রাজি নয় ভারত ও চীন কেউই। এই অবস্থায় রাশিয়া কার পাশে দাঁড়াবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
যদিও চীনের বিপরীত মেরুতে রয়েছে আমেরিকা। গালওয়ান সংঘর্ষের পর আলোচনার মাধ্যেম সমস্যার সমাধানের কথা বলেও ইতিমধ্যে মার্কিন সেনা ইউরোপ থেকে এশিয়ার দিকে রওনা দিয়েছে তা জানিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। এই অবস্থায় আমেরিকা ভারতের দিকেই ঝুঁকে থাকবে বলাই বাহুল্য। অন্যদিকে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও চীনের সমস্যা থাকায় তাদের সমর্থন পাবে দিল্লি। আর স্বাভাবিক নিয়মে পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া দাঁড়াবে চীনের পিছনে। এই অবস্থায় চীন নমনীয় না হলে যুদ্ধ পরিস্থিতি যে তৈরি হয়ে যাবে তা বলে দিচ্ছে প্রেক্ষাপট।
কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে ভারত সীমান্ত সমস্যা মেটানোয় আগ্রহ দেখিয়েছে। কিন্তু চীন এখনও একগুঁয়েমি করে ভারতের জমি আঁকড়ে বসে রয়েছে। গলওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে তারা ৮০০ মিটার দূরে রয়েছে বলে দাবি করলেও, উপগ্রহ চিত্র কিন্তু সে কথা বলছে না। ভারতীয় ভূ-খণ্ডের যে অংশ চীন অবৈধ ভাবে দখল করে স্থায়ী কাঠোমো গড়ে তুলেছে। সেখান থেকে সরার নাম করছে না। এই অবস্থায় চীন নতুন করে প্ররোচনা দিতে শুরু করলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যে আরও জটিল হয়ে উঠবে তা বলে দিচ্ছে সামগ্রিক প্রেক্ষাপট।
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com