ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন কর্মকর্তা কুলভূষণ যাদব পাকিস্তানের সামরিক আদালতে দেওয়া সাজার পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে অস্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। যা ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রানালয় পাকিস্তানের এই দাবিকে প্রহসনের ধারাবাহিকতা বলে অভিহিত করেছে।
ভারতের পক্ষে বলা হয় আন্তর্জাতিক নাগরিককে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারকের (আইসিজে) রায় কার্যকর করার ব্যপারে তার অধিকার ইসলামাবাদ লংঘন করেছে।
এমইএর মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব পাকিস্তানের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছিলেন, ভারত আইনের অধ্যাদেশের আলোকে যাদব কে তার প্রতিকার নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে আলোচনা করার সুযোগ চেয়েছিল। তখন উচ্চ আদালত পাকিস্তানের সামরিক আদালতের দেওয়া সাজা পর্যালোচনা করার অনুমতি দিয়েছিল।
শ্রীবাস্তব বলেন, ভারতীয় সরকার একটি উপযুক্ত বিকল্প বিবেচনায় যাদব কে রক্ষা করতে এবং তাঁর নিরাপদে ভারতে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
শ্রীবাস্তব বিবৃতিতে উল্লেখ করছিলেন, যদিও পাকিস্তানের দাবি কারাগারে বন্দী যাদব গত চার বছর ধরে পুনর্বিবেচনার আবেদনটি করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে। কিন্তু আসল বিষয় যাদব কে নাটকীয় বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে রায়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর চাপ দেওয়ার মাধ্যমে মামলার পুনর্বিবেচনার আবেদন দায়ের করতে অস্বীকার করায়।
গত বছরের জুলাইয়ে আইসিজেতে ১৫-১১ ভোট পাওয়ার মধ্য দিয়ে ভারতের দাবি সমর্থিত হয়েছিল। বেশ কিছু ঘটনা বিবেচনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশনকে মারাত্মক ভাবে লঙ্ঘন করেছে। আন্তর্জাতিক আদালত ইসলামাবাদকে দোষী সাব্যস্ত করে কার্যকর "পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনা" চালুর নির্দেশ দিয়েছিল।
শ্রীবাস্তব বলেন, পাকিস্তান আইসিজের দেওয়া রায়কে মেনে চলার ব্যাপারে একটি গোলকধাঁধা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল৷ কেননা পাকিস্তান ২০ মে একটি অধ্যাদেশ পাশ করার মাধ্যমে উচ্চ আদালতকে সামরিক আদালত দ্বারা দণ্ডিত সাজা পর্যালোচনা করার অনুমতি দিয়েছিল। যার মাধ্যমে তারা একটি ধোয়াশার সৃষ্টি করেছিল।
ভারত অনুরোধ জানায়, রায়ের যে কোনও পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনা কার্যক্রমে পাকিস্তানের বাইরে থেকে একজন আইনজীবীকে যাদবের পক্ষে উপস্থিত থাকবে। কিন্তু পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করে।
পাকিস্তানের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আহমেদ ইরফান ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে বলেন, ১ জুন যাদবকে দেওয়া তার সাজা ও দোষী সাব্যস্তর রায় পুনর্বিবেচনা জন্য একটি আবেদন করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আবেদন করতে অস্বীকার করেছিলেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছিল পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী যাদবকে ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে বেলুচিস্তান থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। যাদব ইরান থেকে পাকিস্তানে প্রবেশের পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে ইসলামাব দাবি করেছিল। পাকিস্তান যাদবের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও বিপর্যয়মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনে। ভারত যাদবের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে৷ ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাদবকে ইরানের চাবিহার বন্দর থেকে অপহরণ করেছিল পাকিস্তান যেখানে তিনি ব্যবসা করছিলেন।
শ্রীবাস্তব উল্লেখ করেন, পাকিস্তানি সামরিক আদালতে নাটকীয় বিচারের শুরু (২০১৩) থেকেই পাকিস্তান এই মামলায় এফআইআর, প্রমাণ, আদালতের আদেশ ইত্যাদি প্রাসঙ্গিক কোনও দলিল ভারতে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। স্পষ্টতই, পাকিস্তান আইসিজের দেওয়া রায়কে মেনে চলার ব্যাপারে একটি গোলকধাঁধা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল৷
জে এস/নি এম
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com