দক্ষিণ এশিয়ার রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় ডিম সংগ্রহে গত ১৪ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। গত এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক ডিম পেয়েছে সংগ্রহকারীরা। এ বছর হালদা থেকে সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি। গত বছর ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ছিল সাত হাজার কেজি।
১৪ বছর আগে ২০০৬ সালে সর্বোচ্চ ডিম পাওয়া গিয়েছিল। সে বছর ৩২ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করেছিল হালদা পাড়ের স্থানীয়রা।
গত শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ডিম পাওয়া শুরু হয় হালদা নদীতে। প্রথমে অল্প পরিমাণে ডিম মিললেও জোয়ার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিমের পরিমাণও বাড়তে থাকে। এবার দীর্ঘ সময় ধরে হালদায় ডিম সংগ্রহ করেছেন সংগ্রহকারীরা।
বিশিষ্ট হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘রেকর্ড সংখ্যক ডিম সংগ্রহে চারটি বিষয় ভূমিকা রেখেছে। প্রথমত, তামাক চাষ বন্ধ করা, হালদা দূষণকারী এশিয়ান পেপার মিল ও হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করা, হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য অফিসের তৎপরতা ও হালদা পাড়ের মানুষদের সচেতন করার কাজে নিয়োজিত আইডিএফের (ইন্টেগ্রেটেড ডেভেলাপমেন্ট সার্ভিস) তৎপরতা। যদি ভারি বর্ষার সঙ্গে তীব্র পাহাড়ি ঢল নামত, তাহলে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ হয়তো সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করত।’
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলি বলেন, ‘৬১৬ জন ডিম সংগ্রহকারী ২৮০ নৌকা নিয়ে প্রায় ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করেছে যা গত ১৪ বছরের মধ্যে রেকর্ড। যদি আমরা এরকম সুফল পেতে চাই তাহলে হালদাকে তার নিজস্ব রুপে থাকতে দিতে হবে’।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন অবৈধ জাল, মাছ, বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গত দেড় বছরে হালদা নদীতে শতাধিক অভিযান পরিচালনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা গত দেড় বছর হালদাকে রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এক লাখ মিটার কারেন্ট জাল, সমপরিমাণ বালি উত্তোলনের পাইপ জব্দ করেছি গত দেড় বছরে। মা মাছ ধরা বন্ধেও তৎপর ছিলাম স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে। সবশেষে তৃপ্তি পেয়েছি যে হালদা তার প্রতিদান দিয়েছে।’
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com