শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১
সর্বশেষ
 
 
আমার জীবনের গল্প: ড: যশোদা জীবন দেবনাথ
প্রকাশ: ০৯:৪১ pm ২৯-০৪-২০২০ হালনাগাদ: ০৯:৪১ pm ২৯-০৪-২০২০
 
এইবেলা ডেস্ক
 
 
 
 


টাকা-পয়সা মানুষের জীবনে অনেক বড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কি বল মিতা (জীবন অধিকারী)? ঠিক বলেছ। এই যে দেখ কৈ মাছ বিক্রি করা ৫৭০ টাকায় আমরা দুজনে কত আমদ করে খেলাম আর বাকি টাকা দিয়ে আরো কয়েকদিন চলা যাবে বেশ। বৃষ্টি থামলেও বৃষ্টির রেশ এখনো কাটেনি, আজ দুই মিতার ভালো খাওয়া-দাওয়া হয়েছে, তাই ময়দার বস্তার উপর শুয়ে দুজনের জম্পেশ গল্প করছি। প্রবাদে আছে পেটে খেলে পিঠে সয় তাই আজ দুজনের কারোই মন্দ লাগছে না গল্প করতে। জীবন মিতা তুই তো পড়াশোনায় অনেক ভালো, বলতে পারো জীবন নামের মানে কি? আমার কাছে কষ্ট ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না মিতা। এই যে দেখো! তুমি কুলিগিরি করে জীবন পার করছো আর আমি, জীবন গড়ার স্বপ্ন নিয়ে একের পর এক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে জীবন দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে আমার, এই বুঝি জীবন শেষ হয়ে গেল। আমি মিতাকে প্রশ্ন করলাম তোমার কাছে জীবন নামের মানে কি মনে হয়? মিতা আমার হাসে আর কয় জীবন, একটা কুলির জীবনে জীবন নামের কোন মানে হয় না! বাদ দাও এসব তোমার কথা বল কি যেন বলতে চেয়েছিলে সেদিন। তেমন কিছু না শুধু বলতে চেয়েছিলাম প্রত‍্যাশা এবং প্রাপ্তির অনেক বড়ো ফারাক মিতা। আমি মূর্খ মানুষ এত কঠিন করে বললে হয়, বুঝলাম না বুঝিয়ে বল। মিতা আমি তিন মাস একটা দোকানের কর্মচারী থেকেছি, এরই মাঝে পরিচয় হলো পাসের দোকানের মালিকের সাথে। ভদ্রলোক জাতিতে হিন্দু আমার সাথে কথা বলে উনার ভালো লেগে যায়। মাঝে মধ্যেই আমাকে ডেকে নিয়ে কথা বলে, এভাবেই হঠাৎ একদিন বলে উঠে- তুমি আর পড়াশুনা করবে না? কথাটা শুনে আমার বুকের মধ্যে আলাদা কম্পন সৃষ্টি হলো, আমি নতুন করে আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। আমি ভাবতেই পারছিলাম না যে টাকার অভাবে আমার পড়াশুনা হবে না। তার প্রস্তাব টা আমার মনে ধরলো এক পর্যায়ে আমি রাজি হয়ে যাই, লজিং মাস্টার কাম দোকানদার। অদম্য আগ্রহ পড়শুনা করার কিন্তু ভাগ‍্যের নির্মম পরিহাসে করতে হচ্ছে দোকানের কর্মচারী কাজ। একটা বিশেষ সমস্যায় সেখানে আর কাজ করা হলো না আমার মিতা, কাজ সেখানে হয়নি আমার তবে উনি কিছু কথা বলেছিল আমায়, সেই কথাগুলোর কারণে জীবন যুদ্ধে হার মানতে ইচ্ছা করে না আমার মিতা। মিতা তুমি যদি আরো পড়াশোনা করতে চাও আমি তোমায় সহযোগিতা করতে পারি, মিতা কে জিজ্ঞাসা করলাম কিভাবে সহযোগিতা করবে তোমার তো নিজেরই চলে না? তোমার কথা ঠিক তবে, আমি তোমায় একটা লজিং মাস্টার থাকার ব্যবস্থা করে দিতে পারি, মিলের পেছনে গোপাল সাহার বাড়িতে। গোপাল সাহা আমাদের ময়দার মিলের মেশিন অপারেটর, উনার ছোট ভাই ও বোনকে পড়াতে হবে বিনিময়ে সেখানে থাকা খাওয়া। কালকে আমি গোপাল সাহার সাথে কথা বলে তোমাকে সেখান দিয়ে আসব, আর দুশ্চিন্তা করোনা এবার ঘুমিয়ে পরো অনেক রাত হয়েছে। মিতা ঘুমিয়ে পড়েছে আমি ময়দার বস্তার উপর শুয়ে ছটফট করছি দুশ্চিন্তায়। পেটে ক্ষুধা নেই তারপরেও আমার ঘুম আসছেনা, রাত পোহানোর খুব বেশি সময় বাকি নেই তারপরেও আজকের রাত আর কোনভাবে শেষ হতে চাইছেনা..। চলবে....

নি এম/

 
 
 
   
  Print  
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
আরও খবর

 
 
 

 

Editor & Publisher : Sukriti Mondal.

E-mail: eibelanews2022@gmail.com

a concern of Eibela Ltd.

Request Mobile Site

Copyright © 2024 Eibela.Com
Developed by: coder71