স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আর কোনও রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। যে পরিমাণ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে রয়েছে, তাদের নিয়েই আমরা নানাবিধ জটিলতায় রয়েছি। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন হলের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, আমাদের সঙ্গে মিয়ানমারের যে বর্ডার লাইন তা মূলত বান্দরবান ও টেকনাফের দিক দিয়ে। আমাদের টেকনাফের পরে যে বান্দরবান সীমান্ত, এটা খুব দুর্গম এলাকা। সেখানে আমাদের যেসব বিওপি রয়েছে, সেগুলোর একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব অনেক বেশি।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি মিয়ানমার তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য নানা ধরনের যুদ্ধে জড়িত হয়েছে। এটা তাদের নিজেদের সমস্যার জন্য। আমরা এখনও সঠিকভাবে জানি না তারা কার সঙ্গে গোলাগুলি করছে, কিংবা কাকে তারা প্রতিহত করছে। আমরা যেটুকু শুনেছি, আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের (মিয়ানমার) বিরোধ। সেই বিরোধের জের ধরেই তারা গোলাগুলি করছে। তার মধ্যে দুই একটি আমাদের সীমান্তের ভেতরে অথবা সীমান্তের কাছাকাছি এসে পড়ছে। এতে একজন নিহত হয়েছেন, কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এজন্য মিয়ানমারের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। তাদের অ্যাম্বাসেডরকে তলব করে তার কাছেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। এজন্য আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শিগগিরই একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আমরা শান্তিকামী দেশ, শান্তি বিঘ্নিত হোক তা চাই না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা লক্ষ করেছেন, এর আগেও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের তাড়া করেছিল। নাফ নদী যখন রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে তাদের প্রবেশের অনুমতি দেন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে সারা বিশ্বে মাদার অব হিউম্যানিটি বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের এই ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ জানাবো। যদি প্রতিবাদেও কাজ না হয়, তাহলে আমাদের জাতিসংঘ রয়েছে। সেখানে আমরা আমাদের অসুবিধার কথা উত্থাপন করবো। আমরা এই বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা করবো।
কোনও বিদেশি সন্ত্রাসীকে আশ্রয় নয়
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিদেশের কোনও বিচ্ছিন্ন বাহিনী বা সংগঠনের কোনও সন্ত্রাসীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এটিইউ, র্যাব, ডিএমপি’র সিটি সবাই মিলে আমরা জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করেছি। যারা জঙ্গিবাদের পথে রেডিক্যালাইজড হয়েছে তাদের কাউন্সিলিং করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি এটি একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমরা সেই জায়গায় কাজ করছি। আমরা সেটা পেরেছি বলে বিশ্বে আমরা মডেল হয়েছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে বলেছেন, আমরা জঙ্গি দমনে অভূতপূর্ব কাজ করেছি। আমরা এখানে কখনও জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেবো না। বিদেশি কোনও সন্ত্রাসীকেও আশ্রয় দেবো না।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদ একবার আমাকে বগুড়ায় নিয়ে গেলেন। দেখলাম এক জঙ্গিকে তার মা র্যাবের হাতে তুলে দিলো। সবার প্রচেষ্টায় আজ আমরা এই জায়গায় এসেছি।
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com