যুক্তরাষ্ট্র-নেপাল মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ কর্পোরেশান (এমসিসি) প্রকল্প (যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা) স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত হয়ে গেছে। নেপালের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ১ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি হওয়ার কারণে কার্যত বাতিল হয়ে যায়।
২০১৭ সালে নেপাল সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে এমসিসি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, সেই চুক্তি অনুযায়ী এই চুক্তি নেপালের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হতে হবে।
এমসিসি চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ছয়টি পূর্বশর্ত পূরণ হতে হবে। এগুলোর মধ্যে একটি হলো চুক্তি পার্লামেন্টে অনুমোদিত হতে হবে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হলো প্রকল্পের নির্মাণ সাইটের যথেষ্ট অগ্রগতি হতে হবে। এর আগে এনভায়রনমেন্ট ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্টের (ইআইএ) অনুমোদন নিয়ে জমি অধিগ্রহণ ও বনাঞ্চল পরিস্কারের কাজ করতে হবে।
এনসিপির উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, “এমসিসি প্রকল্প নিয়ে ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) ভেতরে মতবিরোধ বাড়তে থাকায় পার্লামেন্টারি বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে”।
সূত্র আরও বলেছে, “এনসিপির কট্টর বামপন্থী গ্রুপটি যদি চীনের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ওলির নেতৃত্বাধীন সরকারকে পরিবর্তন করতে চেষ্টা করে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ প্রধানমন্ত্রী এমসিসিকে সমর্থন করেন।
এর আগে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তারা কাঠমাণ্ডুতে তাদের কূটনৈতিক ও অকূটনৈতিক চ্যানেলগুলোকে ব্যবহার করে এমসিসি প্রকল্প ভেস্তে দেয়ার চেষ্টা করছে।
কিছু উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, “কাঠমাণ্ডুর চীনা দূতাবাস এবং নেপালে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত মিস হাউ ইয়াঙ্কি নেপালের বর্তমান সরকারকে পাল্টে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে, যদি সরকার এমসিসি বাস্তবায়ন করে”।
“চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারির সাথে টেলিফোনে কথা বলেন এবং এমসিসি বাস্তবায়ন না করার কথা বলেন। একইভাবে, নেপালের চীনা দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূত এক ডজনের বেশি সাংবাদিকদেরকে অর্থ দিয়েছেন যাতে তারা এমসিসি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লেখে। একই সাথে চীনা দূতাবাস বেশ কিছু অলাভজনক সংগঠনকে অর্থ দিয়েছে যাতে তারা এমসিসি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সড়কে বিক্ষোভ করে। সাবেক মাওবাদী ক্যাডাররা এই সব বিক্ষোভে জড়িত ছিল”।
এমসিসি প্রকল্প নিয়ে যারা বাধা দিচ্ছেন, তাদের প্রধান অভিযোগ হলো এই প্রকল্পের একটি সামরিক দিক রয়েছে এবং প্রকল্পের নামে যুক্তরাষ্ট্র নেপালে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করবে। প্রধানমন্ত্রী ওলি, মার্কিন দূতাবাস এবং অন্যান্যরা অবশ্য এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন।
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com