অনেকে মা ছিন্নমস্তকে "গলাকাটা কালী", "ছিন্নমস্ত কালী" বলেন। এটা ভুল ধারণা। ছিন্নমস্তা কালীকূলের দেবী হলেও কালী দেবীর রূপে পরেন না। ছিন্নমস্তকে "বজ্রবৈরোচনী" বলে। এঁনার ভৈরব কবন্ধ বা কালরুদ্র। ছিন্নমস্ত দেবীর আবির্ভাব সম্বন্ধে বলা হয় সতী দেবী পিত্রালয়ে যেতে বাধা পেয়ে ১০ মহাবিদ্যা রূপ ধারণ করেন- যাঁর একটি দেবী ছিন্নমস্ত। দেবী পার্বতীর জীবনেও আমরা ছিন্নমস্তর স্বরূপের পরিচয় পাই। দেবী পার্বতী জয়া বিজয়াকে নিয়ে স্নানে গিয়েছিলেন। স্নানান্তে জয়া ও বিজয়ার ক্ষুধার উদ্রেগ হওয়ায় দেবী পার্বতীর কাছে আহার চাইলেন। দেবী বললেন- "কৈলাশে গিয়ে আহার প্রদান করবো।" কিন্তু জয়া বিজয়ার সহ্য হয় না। দেবী তখন নখাগ্র দ্বারা নিজের শির কেটে বাম হস্তে ধারণ করলেন। দেবীর ছিন্ন স্কন্ধ দিয়ে রক্তের তিন টি ধারা নির্গত হল। দুটি ধারা গেলো ডাকিনী ও বর্ণিনীর মুখে, একটি ধারা দেবীর মুখে। দেবীর নিজ রুধির ধারা এভাবে গ্রহণ করতে দেখে ত্রিলোক হলেন স্তম্ভিত। দেবতারাও বিকট মূর্তি দেখে ভগবতীকে প্রণাম জানালেন। ছিন্নমস্ত দেবীর এই গুপ্ত রূপে বহু তত্ত্বকথা লুক্কায়িত- যা কেবল গুরু পরম্পরাতে গুপ্ত। ছিন্নমস্তা দেবী প্রত্যালীঢ় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে পদতলে সকামরত মদন ও রতিকে দলন করেন। এই রূপ ব্রহ্মচর্য বৈরাগ্য মূর্তি। ছিন্নমস্ত দেবীকে ব্রহ্মচর্যস্বরূপিণী দেবী বলা হয়। এই দেবীর পূজা সাধারণ কেও করতে পারেন না। কেবল তন্ত্র সাধকেরা তন্ত্র মতে দেবীর পূজা করেন। রাজাপ্পা, বাঁকুরা, কামাখ্যা প্রভৃতি জায়গা ও ভারতের বেশ কিছু জায়গাতে এই দেবীর মন্দির ও পূজা দেখা যায়।
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com