আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন নারীরা। রোববার দেশটির নারী প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।
আগামী মাস থেকে সৌদি নারীরা সরকারি অফিস পরিচালনা করবেন। রক্ষণশীল দেশটির মন্থর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নারী অধিকারের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। এর মাধ্যমে সৌদি আরবের নারীরা কিছুটা হলেও মুক্তির স্বাদ পেতে যাচ্ছেন।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
সৌদি আরবে ১২ ডিসেম্বরের পৌরসভা নির্বাচনে প্রায় ৯শ নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এই প্রথমবারের মতো সৌদি নারীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যাচ্ছেন।
জেদ্দার রেড সি নগরীর অ্যাকটিভিস্ট সাহার হাসান নাসিয়েফ বলেন, ‘এটা নারী অধিকারের প্রথম পদক্ষেপ। এটি আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন।’
এই নিয়ে পুরুষরা তৃতীয়বারের মতো পৌর-নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে।
এর আগে সৌদি আরবে ২০০৫ ও ২০১১ সালে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সৌদি আরবে রাজতন্ত্র বিদ্যমান। দেশটির মন্ত্রিসভায় কোন নারী সদস্য নেই। পৃথিবীতে একমাত্র সৌদি আরবেই নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই।
রক্ষণশীল এই দেশটির নারীরা আপাদমস্তক কালো কাপড়ে ঢেকে বাড়ির বাইরে বের হন। এছাড়াও তারা একা ঘরের বাইরে বের হতে পারেন না।
পরিবারের কোন পুরুষ সদস্য ছাড়া সৌদি নারীরা ঘরের বাইরে বের হতে, কোথাও বেড়াতে বা কর্মস্থলে যেতে পারেন না।
এমনকি বিয়ের ক্ষেত্রেও তাদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার নেই।
বাদশাহ্ আব্দুল্লাহর শাসনকালে ধীর গতিতে হলেও সৌদি আরবে নারী অধিকারের বিস্তৃতি ঘটে। তিনি ২০০৫ সালে পৌর নির্বাচন শুরু করেন এবং এই নির্বাচনে ভবিষ্যতে নারীরা অংশ নিতে পারবেন বলে ঘোষণা দেন।
২০১৩ সালে বাদশাহ্ আব্দুল্লাহ্ নারীদের শুরা কাউন্সিলের সদস্য করেন। শুরা কাউন্সিল মন্ত্রিসভাকে পরামর্শ দিয়ে থাকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাদশাহ আব্দুল্লাহ্ মারা যাওয়ার পর বাদশাহ্ সালমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বাদশাহ্ সালমান নারীদের নির্বাচনে অংশ গ্রহণের বিষয়টি এগিয়ে নেন।
উপসাগরীয় অন্য দেশগুলোতে কয়েক বছর ধরেই নারীদের ভোটাধিকার রয়েছে।
সৌদি নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৮৪টি পরিষদ আসনের জন্য প্রায় ৭ হাজার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সৌদি আরবের মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার ৬শ’ নারী ভোটদানের জন্য নিবন্ধন করেছেন। আর ১৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি পুরুষ ভোটার ভোটের জন্য নিবন্ধন করেছেন।
উপসাগরীয় উপকূলীয় নগরী কাতিফের প্রার্থী নাসিমা আল-সাদাহ্ বলেন, ‘আমাদের পক্ষে এই নির্বাচনে জয়লাভ করা অত্যন্ত কঠিন।’
তিনি রোববার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা করেছেন।
এইবেলা/এইচ আর