শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০
সর্বশেষ
 
 
বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ‘চিড় ধরার নয়'
প্রকাশ: ০৮:১৯ pm ০৪-০৮-২০২০ হালনাগাদ: ০৮:১৯ pm ০৪-০৮-২০২০
 
এইবেলা ডেস্ক
 
 
 
 


মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফোন দেন। ফোনে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিসহ বেশকিছু বিষয়ে তারা আলোচনা করেন— যা বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে নানা বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা শুরু করে ভারতীয় গণমাধ্যমে। কোনো কোনো গণমাধ্যম ‘নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক চিড় ধরার’ ইঙ্গিতও দেয়। তবে বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই দেশের সম্পর্ক চিড় ধরার নয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর দীর্ঘদিন বিশেষ নজর রেখে আসছেন মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এত ঠুনকো নয় যে একটি টেলিফোনে নষ্ট হয়ে যাবে।’

‘একটি ফোনকল বা একটি কথায় চিড় ধরবে, এটা যারা ভাবছে তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে’— বলেন তিনি।

মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘ভারতের সব রাজনৈতিক দল একবাক্যে বুঝতে পারে যে, ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক অপরিহার্য। আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্যও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের বিকল্প নেই।’

‘সুতরাং গত ১০-১২ বছরে দুই দেশের রাজনৈতিক নেতা ও জনগণের মধ্যে অত্যন্ত সুদৃঢ় বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। এছাড়া দুই দেশের সম্পর্ক রক্তের সম্পর্ক। ভারতের মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে। সুতরাং এ সম্পর্কের চিড় ধরা সহজ নয়’— মনে করেন এই মুক্তিযোদ্ধা ও বিশ্লেষক।

মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘পাকিস্তানের এখন চীন ছাড়া বন্ধুরাষ্ট্র নেই। তারা বন্ধুহীন বিচ্ছিন্ন একটি রাষ্ট্র। ভারতের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক চরম অবনতি ঘটেছে। সুতরাং তারা চাইবে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনোরকম একটি সম্পর্ক করতে বা টালবাহানার আশ্রয় নিতে।’

তিনি মনে করেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেননি। তারা (পাকিস্তান) হয়তো এটা করেছে যাতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিনষ্ট হয়। এ সম্পর্কে যাতে ফাটল ধরে। যদিও এই টেলিফোন নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্কের ইতিহাস টেনে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পাকিস্তান একাত্তর সালে বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি। তাদের সেনারা যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তারা তাদের বিচার করেনি। একাত্তরের আগে পাকিস্তান একটি রাষ্ট্র ছিল। আলাদা হওয়ার পর আমাদের ৫৬ শতাংশ পাওয়ার কথা। পাকিস্তান সেই নায্য হিস্যাও দেয়নি। পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু করেছিল। অর্থাৎ তারা আগ্রাসী রাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী এবং প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দৃষ্টান্ত অনুযায়ী, যে রাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু করবে, যুদ্ধের সব ক্ষয়ক্ষতি সেই রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে। আমাদের ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতিপূরণ তারা দেয়নি। পাকিস্তান তাদের নাগরিকদের ফেরতও নেয়নি।’

‘এছাড়া দেশটি বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতাও চালিয়েছে বিভিন্ন সময়। এসব অমীমাংসিত থাকা অবস্থায় পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাংলাদেশের মানুষ ভালোভাবে নেবে না’— বলেন এই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশর সম্পর্ক কখনোই খুব ভালো ছিল না। তার ওপর আমরা যখন আমাদের নিজস্ব আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছিলাম তখন তারা সেটা নিয়ে নিজেদের পার্লামেন্টে অযাচিত মন্তব্য করল। যে কারণে ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক আরও খারাপ হয়।’

এই কূটনীতিকের মতে, ‘যে কার্যকলাপের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে, সেটা তাদের নির্বুদ্ধিতা ছিল। সেটা কাটিয়ে উঠে পাকিস্তান এখন নিজের স্বার্থেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে চাইছে।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায় পাকিস্তান। এটা স্বাভাবিক।’

সাবেক এই কূটনীতিকও মনে করেন, পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।
সূএ: জাগো নিউজ

নি এম/ 

 
 
 
   
  Print  
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
আরও খবর

 
 
 

 

Editor & Publisher : Sukriti Mondal.

E-mail: eibelanews2022@gmail.com

a concern of Eibela Ltd.

Request Mobile Site

Copyright © 2024 Eibela.Com
Developed by: coder71