বহুল প্রতীক্ষিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে না। মিয়ানমারের সঙ্গে সই করা চুক্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, প্রয়োজনীয় আয়োজন অসম্পূর্ণ থাকায় তা শুরু হচ্ছে না।
৫০টি রোহিঙ্গা পরিবারের দেড়শ' জনকে বৃহস্পতিবার মিয়ানমারে পাঠানোর কথা ছিল। তবে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাকে তারা বলেছে, তারা কেউই মিয়ানমারে ফিরতে চায় না। এর পর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দেশের কর্মকর্তারাই প্রস্তুত ছিলেন। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ট্রানজিট ক্যাম্প দিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে প্রত্যাবাসন শুরু করার কথা ছিল। রোহিঙ্গাদের দাবি, রাখাইনে ফেলে আসা বাড়িঘর ফিরে না পেলে এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত না হলে সেখানে ফিরে যাবে না তারা। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার অফিসের মুখপাত্র ফিরাস আল খাতেব বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হতে হবে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদার সঙ্গে। রাখাইনে পরিস্থিতি এখনও রোহিঙ্গাদের জন্য অনুকূল নয়। সেখানে তাদের জন্য স্বাধীন চলাফেরায় বাধা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাখাইনে ফিরে যেতে নিরাপদ মনে করছে না রোহিঙ্গারা।
ইউএনএইচসিআরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরে না গেলে তাদের বলপূর্বক সেখানে পাঠানো উচিত হবে না। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি আমরা বাংলাদেশ সরকারের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় না হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এখন দুই দেশের সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর স্বাক্ষরিত চুক্তিতে মিয়ানমার সম্মত হয়েছিল দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করবে। সে লক্ষ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। কমিটির প্রথম সভায় প্রত্যাবাসনের জন্য আট হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে এ পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গার বিষয়ে মিয়ানমার ছাড়পত্র দিয়েছে। ছাড়পত্র দেওয়া এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে আজ ১৫ নভেম্বর থেকে প্রত্যাবাসন শুরু করবে বলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশও এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে। তবে রাখাইনে পরিস্থিতি অনুকূল না হলে রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে রাজি নয়। বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে তালিকাভুক্ত অনেক রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এতে সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারাও পড়েছেন বেকায়দায়।
নি এম/
![]() |
সম্পাদক : সুকৃতি কুমার মন্ডল খবর প্রেরণ করুন # info.eibela@gmail.com ফোন : +8801517-29 00 02 +8801711-98 15 52 a concern of Eibela Foundation |
|