সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ছড়াকার এবং রবীন্দ্রগবেষক অমিতাভ চৌধুরী জন্মঃ- ১৬ জুলাই, ১৯২৮ - মৃত্যুঃ- ১ মে , ২০১৫।
অমিতাভ চৌধুরী জন্মেছিলেন বর্তমান বাংলাদেশের সিলেটে। তাঁর পড়াশোনা কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে। জীবনের একটা সময় তিনি শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। পরে পঞ্চাশের দশকে যোগ দেন সাংবাদিকতা পেশায়। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি একজন রবীন্দ্রগবেষক হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেন। তিনি তাঁর গবেষণার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথকে এক নতুন আলোয় বাঙালি সমাজের কাছে তুলে ধরেছিলেন। বলতেন, “আলখাল্লার ভিতরের মানুষ রবিকে চেনানোর চেষ্টা করেছি চিরকাল।” সাংবাদিক হিসেবে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছিলেন তিনি। তিনি যোগ দিয়েছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকায়। এই পত্রিকার বার্তা সম্পাদকও ছিলেন বেশ কিছুকাল। পরবর্তী সময়ে যুগান্তর ও আজকাল পত্রিকার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সাংবাদিকতার পেশার সূত্রে ইন্দিরা গাঁধী, মুজিবর রহমান, সুচিত্রা সেনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। শতাধিক বইয়ের লেখক অমিতাভ চৌধুরী। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন অনবদ্য ছড়াকার। তিনিই প্রথম সুচিত্রার অন্তর্লোকে আলো ফেলেছিলেন। ১৯৮৩ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী পান তিনি। ২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করে। শিলচর বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডিলিট উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছিল।
মজাদার ছড়া লিখতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন অমিতাভ চৌধুরী। যেমন— ছোটলোক বা বড়লোক/সবাই যাবে পরলোক/ছোটই থাকো সুতরাং/যেমন থাকে পিপিড়াং...! আবার অভিরাম সাহা রায়/অবিরাম সাহারায়/থাকে বালু পাহারায়/যাতে বালু না হারায় ।
কাটাকুটি - কবি অমিতাভ চৌধুরী
লম্বা এবং চওড়া ছিল বাংলা নামে দেশ,
এক কলমের খোঁচায় কেটে দুই টুকরোয় শেষ।
কোথায় গেল ঢাকা শহর কোথায় বরিশাল,
পদ্মা এবং মেঘনা গেল রূপসা আড়িয়াল।
কাটাকুটি চলল অনেক সব কিছু খান খান,
স্বাধীনতার নামে কাটি নিজের নাক ও কান।
দু-কান কেটে হইনি খুশি আবার কাটার ঝোঁক,
যা পেয়েছি তাকে কাটেন মনে অনেক লোক।
উপর দিকে আছে তরাই নীচে সোঁদরবন,
উত্তরে আর দক্ষিণেতে ফারাক করার পণ।
দক্ষিণকেই পশ্চিম কই ওটা উত্তর বং,
অনেক দূরের শহর যেন মালদা কালিম্পং।
কোচবিহার আর শিলিগুড়ি ডুয়ার্স বালুরঘাট,
উপেক্ষিতার অভিমানে কেঁদে ভাসায় মাঠ!
দূরে আরও নিকট টেনে না যদি নিই, পরে
কলকাতাটাই বাংলা হয়ে রইবে কেবল পড়ে।
বই - কবি অমিতাভ চৌধুরী
বইশাখ মাসে আমি
বইকুণ্ঠে যেতে,
বইবাহিক মহাশয়
ডেকেছেন খেতে।
বইতরণী পার হতে
বইরাগী আসে,
বইকাল বেলা থেকে
লোক কেন হাসে ?
![]() |
সম্পাদক : সুকৃতি কুমার মন্ডল খবর প্রেরণ করুন # info.eibela@gmail.com ফোন : +8801517-29 00 02 +8801711-98 15 52 a concern of Eibela Foundation |
|