পরাধীন দেশে ঐশ্বর্যবান যিনি, স্বাধীন দেশে আজ তিনি সহায়-সম্বলহীন! বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাড়িতে গিয়ে দেখেন তাঁর ঘরবাড়ি জায়গা জমি সবকিছু দখল করে নিয়েছে এই বাংলার অমানুষ! এমনকি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিও মেলেনি। এভাবে কেটেছে গত ৫০টি বছর। দখলে উন্মত্ত আমরা কখনো ভাবি না সবকিছুরই একটা পরিনাম আছে। উন্মত্ত নেশায় প্রকৃতিকে দখল করেছি। তাই প্রকৃতিও প্রতিশোধ নিচ্ছে।
"বিপুল ঐশ্বর্য্যের মাঝে যার জন্ম তারই দিন কাটে আজ অনাহারে অর্ধাহারে। অর্থাভাবে চিকিৎসা হয় না। পরাধীন দেশের ঐশ্বর্যবান মিলন কান্তি সেন আজ স্বাধীন দেশে সহায়-সম্বলহীন। যার সততা, নিষ্টা, পেশাদারিত্ব, ব্যক্তিত্ব, মহানুভবতা, বিপদে দুর্দিনে অসহায় অনাহারী ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে যিনি স্নেহ ভালবাসা আর সেবার প্রতীক দেবতূল্য হয়ে চন্দনাইশবাসীর হৃদয়ে দ্রুততম সময়ে স্থান করে নিয়েছেন উনার লেখা একটা পোস্ট নিচে শেয়ার করলাম।
মিলন কান্তি সেন। যেদিন এই মানুষটিকে প্রথম দেখেছি তারপর থেকে তাঁর জীর্ণশীর্ণ দেহটি চোখে ভাসে। অদ্য পুলিশ সুপার মহোদয় তাঁর বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। বলেছেন তাকে যেন পর্যাপ্ত সহায়তা করা হয়। তাই অদ্য কাজের মাঝে সময় করে দুপুরে আবারো তাঁর বাড়িতে যাই। বাড়িতে কাহাকেও না দেখে ডাক দেই। ভিতর থেকে ক্ষীণকন্ঠে তাঁর সাড়া পাই। ভিতরে না ঢুকে দরজায় বসে কথা বলি।
জানালেন চার দিন যাবৎ অসুস্থ পাতলা পায়খানা হচ্ছে। উঠে দাঁড়ালে শরীর কাপে, মাথা ঘুরে তাই শুয়ে আছেন। ডাক্তার দেখিয়েছেন কিনা জিজ্ঞাসা করলে জানান ছেলে ফার্মেসি থেকে ঔষধ এনে দিয়েছিল কোন কাজ হয়নি। দুপুরে খেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে জানান ছেলে বউ ভগবান চৌধুরীহাট একটি দর্জি দোকানে সেলাই কাজ করে। যা পায় তা দিয়েই কোন রকমে সংসার চলে। কথার মাঝে জানালেন আলু ভাজি আর গন্ধ বাদালি পাতার বড়া রান্না করা হয়েছে তা দিয়ে দুপুরের খাবার হবে।
জমিদার, বিপুল ধন সম্পত্তির মালিক যাত্রা মোহন সেন এর দৌহিত্র আর ব্যারিস্টার যতীন্দ্রমোহন সেন এর পুত্র, মা যার সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেত্রী নেলী সেনগুপ্ত, বিপুল ঐশ্বর্য্যের মাঝে যার জন্ম তারই দিন কাটে আজ অনাহারে অর্ধাহারে। অর্থাভাবে চিকিৎসা হয় না।
কথায় কথায় জানালেন ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন দেশ মাতৃকার টানে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে। যুদ্ধ করে দেশকে হানাদার মুক্ত করে ফিরে এসে দেখেন তাঁর ভিটেমাটি জায়গা-জমি দখল হয়ে গেছে। যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন কিন্তু দখল হওয়া নিজের ভিটেমাটি আর ফেরত পাননি। তৎকালীন চেয়ারম্যান, মেম্বারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন কিন্তু লাভ হয়নি।
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com