সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা তাঁত সমৃদ্ধশালী এলাকা। উপজেলার আনাচে কানাচে রয়েছে শাড়ি তৈরির কারখানা।
এখানের বিভিন্ন নকশী গাঁথা শাড়ী তৈরি হলেও এ সময়ে তৈরি হয় বিবাহ-সাদী, পুজা-পার্বনের জন্য সরষে রং এর হলুদ শাড়ী। নকশী গাঁথা হলুদ শাড়ী গুলো বিক্রি হচেছ নরসিংদি, বাবুরহাট, ঢাকা গাওছিয়া, সাতক্ষিরা, মাধবদী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
হলদে শাড়ির যেমন ঝলমল হাসি তেমনি আজ বেলকুচি উপজেলার বিস্তির্ন এলাকায় সরষের হলুদ ফুলের হাসিতে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। যে দিকে দৃষ্টি যায় শুধুই হলুদের হাসি। হলদে বরণ সেই মাঠ যেন চিরায়ত রূপসী বাংলার জয়গান করছে।
উপজেলার সরষে ক্ষেতের এই দৃশ্য চোখে পড়বে পৌর এলাকা ছেড়ে গ্রামে পা দিলেই। উপজেলার দৌলতপুর, ধুকুরিয়াবেড়া, রাজাপুর, বড়ধুল, ভাঙ্গাবাড়ী ও বেলকুচির সদর ইউনিয়নের চরাঞ্চল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মাঠকে মাঠ হলুদ রাঙা সরষের ক্ষেত।
চাষ খরচ তুলনামূলক কম আর লাভজনক হওয়ায় বাড়ির পাশেই এক চিলতে জমি থেকে শুরু করে ফসলের মাঠে সরিষা বুনে দিয়েছেন কৃষক। ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক টুটুল শেখ জানান, এবার আগাম রোপা আমন বুনে ছিলেন।
নভেম্বরের প্রথমে এক বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছি। এক হাতের বেশী ছাড়িয়েছে সরিষা গাছ। গতবছর সরিষা চাষ করে বেশ মুনাফা হওয়ায় এবারও চাষ করছেন। তিনি বলেন, গত বছর ১ বিঘা জমিতে ৬ মণ সরিষা পান। ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি করে ৯ হাজার টাকা দাম পান, খরচ করেছিলেন মাত্র ৩ হাজার টাকা বলে তিনি জানান।
ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের মেটুয়ানী গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান, বড়ধুল ইউনিয়নের বিলপাড়া গ্রামের বদিউজ্জামানও দাবি করেন, সরষে চাষ বেশ লাভজনক, চাষাবাদ খরচ কম। তেমনি রোগ বালাইও খুব বেশী হয় না।
যে কারণে প্রতি বছর রবি মৌসুমে সরিষা বুনছেন। বেলকুচি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৩ হাজার কৃষকের মাঝে সরিষা বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।
কৃষকদের সরিষা চাষে প্রণোদনা যুগিয়ে তেলের ঘাটতি মেটাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। কৃষি কর্মকর্তাদের ভাষ্য, ধান ও সবজি উৎপাদনে উপজেলার স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। যে কারণে অন্যান্য ফসল উৎপাদনে নজর দেয় অধিদপ্তর।
আর তাই আমন ও বোরো ধান আবাদের মধ্যবর্তী সময়ে মাঠ ফাঁকা না রেখে কৃষকদের সরষে চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। প্রণোদনার অংশ হিসেবে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে ৬ ইউনিয়নের ৩ হাজার কৃষকের মাঝে।
চলতি বছর আগাম আমন করা চাষীদের অনেকেই ফসল ঘরে তুলেছেন। তাদের অনেকেই অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে সরিষা চাষ শুরু করেন। সে সব ক্ষেতের সরিষা হাত খানেক বেড়ে উঠেছে।
বেলকুচি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ধান ও সবজি চাষে উপজেলার কৃষি অঞ্চল স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বর্তমানে সরকার ফসল উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে বেশি বেশি।
আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী সময়ে যখন ফসলের মাঠ খালি থাকছে তখন অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরষে চাষে দেশে তেল উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে।
এইবেলাডটকম/চন্দন/গোপাল
![]() |
সম্পাদক : সুকৃতি কুমার মন্ডল খবর প্রেরণ করুন # info.eibela@gmail.com ফোন : +8801517-29 00 02 +8801711-98 15 52 a concern of Eibela Foundation |
|