eibela24.com
শুক্রবার, ২৯, মার্চ, ২০২৪
 

 
আজ থেকে শুরু ঝুলন যাত্রা, জানুন এর তাৎপর্য 
আপডেট: ০৯:১২ pm ৩০-০৭-২০২০
 
 


আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হল ঝুলন যাত্রা। শ্রাবণ মাসে একাদশী থেকে পূর্ণিমা, এই পাঁচদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব ঝুলন উৎসব। শ্রাবণ মাসের প্রতিপদ তিথি থেকে আবম্ভ হয়ে পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত পাঁচ-দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি উদযাপন করা হয়। রাখি পূর্ণিমার মাধ্যমে ঝুলন যাত্রার সমাপ্তি ঘটে। মথুরা-বৃন্দাবনের মতোই বাংলার ঝুলন উৎসবের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। এটি দোল পূর্ণিমার পরবর্তী বৈষ্ণবদের আর একটি বড় উৎসব। 

শাস্ত্রমতে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর ভক্ত অভক্ত নির্বিশেষে সকলকে অনুগ্রহ করবার জন্য গোলকধাম থেকে ভূলোকে এসে লীলা করেন। ঝুলন শব্দেরটির সঙ্গে 'দোলনা' শব্দটি রয়েছে। তাই এই সময় ভক্তরা রাধাকৃষ্ণকে সুন্দর দোলনা তে বসিয়ে পূজো করেন।

শাস্ত্রজ্ঞদের মতে, বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণর প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করে দ্বাপরযুগে এই ঝুলন উৎসবের সূচনা হয়েছিল। এক এক অঞ্চলে দোল বা দুর্গোৎসবের মতো ঝুলন উৎসবের আকর্ষণ কিছু মাত্র কম নয়। ঝুলনেও দেখা যায় নানা আচার অনুষ্ঠান ও সাবেক প্রথা।

শুধুমাত্র রাধাকৃষ্ণের যুগলবিগ্রহ দোলনায় স্থাপন করে হরেক আচার অনুষ্ঠান উৎসব নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য। শ্রাবণের শুক্লা একাদশী থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে এই উৎসব। এই উৎসব হয় মূলত বনেদিবাড়ি এবং মঠ-মন্দিরে। তবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছোটদের ঝুলন সাজানোর আকর্ষণ। নানা ধরনের মাটির পুতুল, কাঠের দোলনা আর গাছপালা দিয়ে ঝুলন সাজানোর আকর্ষণ ছোটদের মধ্যেও রয়েছে। কোথাও কোথাও ঝুলন উপলক্ষে চলে নামসংকীর্তন। এই সময় প্রতি দিন ২৫-৩০ রকমের ফলের নৈবেদ্য, লুচি, সুজি নিবেদন করা হয়।

শ্রীকৃষ্ণের দ্বাদশ যাত্রার কথা শাস্ত্রে উল্লেখ আছে, কিন্তু আমরা সবগুলো পালন করি না। কিছু কিছু বিশেষ উল্লেখযোগ্য যাত্রানুষ্ঠান নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়, যেমন- রথযাত্রা, রাসযাত্রা, দোলযাত্রা, স্নানযাত্রা, ঝুলনযাত্রা ইত্যাদি। শাস্ত্রকাররা এসব যাত্রাগুলোকে বিশেষ তাৎপর্যমন্ডিত ও তত্বসমৃদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন। 

প্রশ্ন জাগতে পারে দোলায় রাধা গোবিন্দের বিগ্রহ স্থাপন করে পূর্ব-পশ্চিম দিক দিয়ে ঝোলানোর তাৎপর্য কী? এ বিষয়ে, শাস্ত্রীয়, ভৌগোলিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে দোলনাটি দোলানো হয় পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে। সূর্যের উদয় অস্ত ও অবস্থানের দিক নির্দিষ্ট করেই তা করা হয়। সূর্য হচ্ছে পৃথিবীতে সর্ব প্রকার শক্তির উৎস। আর পৃথিবীর গতি হচ্ছে-দু’টো, আহ্নিকগতি ও বার্ষিক গতি। দুই গতিধারায় বছরে দু-বার কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখায় গিয়ে অবস্থান করে। তখন ঘটে সূর্যের উত্তরায়ন ও দক্ষিণায়ন অবস্থান। সেই কারণেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা অনুষ্ঠানে দোলনাটিকে ঝোলানো হয় উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে।

নি এম/